প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ
সম্প্রতি রাজশাহীর বাঘায় একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে, যেখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহী তথা বরেন্দ্র অঞ্চলের উন্নয়ন গবেষণাধর্মী যুব ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস) এই বর্বর, অনৈতিক ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানায় এবং দ্রুত ও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর দুপুরে চকএনায়েত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, ছাত্রীটিকে অফিসে ডেকে নিয়ে তার সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেন। ঘটনার সময় অফিসে কেউ উপস্থিত না থাকায় প্রধান শিক্ষক সুযোগের অপব্যবহার করেন। ছাত্রীটি বাড়ি ফিরে তার পিতা-মাতাকে পুরো ঘটনাটি জানালে, তারা তৎক্ষণাৎ প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে যান। অভিযোগ রয়েছে, বিষয়টি জানতে চাওয়ায় শিক্ষক উল্টো তাদের হুমকি দেন এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও, ১৩ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিরুপায় হয়ে ছাত্রীটির মা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। এটি শুধু একটি ব্যক্তিগত ঘটনা নয়, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুরা যে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে তার একটি উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত।
ইয়্যাস মনে করে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি এবং এসব প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটি শিক্ষক ও কর্মকর্তার প্রতি আমাদের সমাজের একটি গভীর আস্থা রয়েছে। এই আস্থার অপব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদান না করলে সমাজে ভয়ানক বার্তা ছড়াবে, যা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের জন্য আরও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
ইয়্যাস স্থানীয় প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। একইসঙ্গে, আমরা দাবি করছি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে নীতিমালা প্রণয়ন ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু করা হোক, যাতে শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে যেকোনো ঘটনা সম্পর্কে অভিভাবকদের জানাতে পারে এবং ন্যায়বিচার পেতে পারে।
ইয়্যাস ভুক্তভোগী পরিবারকে জানাচ্ছে যে আমরা তাদের পাশে আছি এবং সমাজে শ্লীলতাহানি, নিপীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।